মুদ্রাস্ফীতি বাড়লেও রেমিট্যান্সে স্বস্তি

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার কিছুটা বেড়েছে, যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানির দাম এবং পরিবহন ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি এই পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মার্চ ২০২৫-এ মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.২৮ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১.৩ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের অস্থিরতা এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এই প্রবণতার জন্য দায়ী।

তবে এই অস্থিরতার মধ্যেও একটি খাত কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে—রেমিট্যান্স। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়া থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্সে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনা এবং ডিজিটাল হাওয়ালা প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন,
“রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে ডলার সংকট কিছুটা কমেছে এবং টাকার মানেও কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।”

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ অর্থনীতির জন্য একটি সহায়ক শক্তি হয়ে উঠেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে দেশের উৎপাদন ও রপ্তানি খাতে মনোযোগ বাড়ানো না হলে শুধু রেমিট্যান্স দিয়ে মুদ্রাস্ফীতির চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।

নাগরিক ভাবনা:

“বাজারে তো জিনিসের দাম দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু প্রবাসী ভাইয়ের টাকা দিয়েই সংসার চালানো সহজ হয়েছে।” — মেহজাবিন আক্তার, সিলেট
“রেমিট্যান্স বাড়া ভালো, কিন্তু দেশেও যেন চাকরির সুযোগ বাড়ে।” — সালেহ উদ্দিন, নোয়াখালী

🧾 সংক্ষেপে:
✅ মুদ্রাস্ফীতি: ৯.২৮%
✅ মার্চ ২০২৫-এ রেমিট্যান্স: ২.২ বিলিয়ন ডলার
✅ টাকার মান কিছুটা স্থিতিশীল
✅ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব